সকাল ৮:০৫ বৃহস্পতিবার ৯ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ১লা রমজান, ১৪৪৪ হিজরি

হোম দেশ টিকা নিয়ে এখনো জনস্বার্থবিরোধী অপপ্রচারে বিএনপি -বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনে তথ্যমন্ত্রী

টিকা নিয়ে এখনো জনস্বার্থবিরোধী অপপ্রচারে বিএনপি -বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনে তথ্যমন্ত্রী

লিখেছেন kajol khan
Spread the love

 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রথম থেকেই করোনার টিকা নিয়ে অসার সমালোচনাকারী বিএনপি এখনো যে অপপ্রচারে লিপ্ত, তা জনস্বার্থবিরোধী এবং দেশের আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে ক্লিনিক ভবন প্রাঙ্গণে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে তথ্য অধিদফতর আয়োজিত ‘আলোকচিত্র, ডিজিটাল ডিসপ্লে এবং সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনী এবং তথ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইটে বঙ্গবন্ধু ই-কর্নার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন। প্রধান তথ্য অফিসার মোঃ. শাহেনুর মিয়ার সভাপতিত্বে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এবং সচিব মোঃ: মকবুল হোসেন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।

বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভীর টিকা নিয়ে সাম্প্রতিক বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রিজভী সাহেব অনেক দিন অসুস্থ ছিলেন। সেকারণে কিছুদিন তার বক্তব্য আমরা পাইনি। তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন আবার বক্তব্য প্রদান করছেন এজন্য স্বস্তি প্রকাশ করছি। তবে তার বক্তব্যে মনে হচ্ছে, তিনি এখনও পুরোপুরি সুস্থ হন নাই, তার আরো বিশ্রাম দরকার, আরো চিকিৎসা দরকার। সেকারণে তিনি গতকাল যে বক্তব্য রেখেছেন সেটি আসলে সুস্থতার লক্ষণ নয়।’

ড. হাছান বলেন, ‘রিজভী সাহেব তার বক্তব্যে অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকা নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকা নেন নাই, মডার্নার টিকা নিয়েছেন। অর্থাৎ সরাসরি খাননি, হাত ঘুরিয়ে খেয়েছেন। কারণ যে টিকাই তিনি গ্রহণ করেন না কেন সেই টিকাও সরকার সংগ্রহ করেছে। সরকারের টিকা কার্যক্রম নিয়ে তাদের বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা প্রথম থেকেই এবং এই অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকাও বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বহুজন গ্রহণ করেছেন।’

সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণার বরাত দিয়ে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকা যেটা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট তৈরি করছে, সেটা অন্যান্য অনেক টিকার চেয়ে বেশি কার্যকর, এমনকি ডেল্টা ধরণের করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধেও ৯২% কার্যকর। কোনো কোনো গবেষণায় বলা হচ্ছে এটি দীর্ঘদিন ধরে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে থাকবে। ডেল্টা ধরণের উৎপত্তি হয়েছে ভারতে, আর সেই ভারতে এই টিকা প্রায় ১০ কোটির বেশি মানুষকে দেয়া হয়েছে এবং সেখানে শনাক্তের হার ১ শতাংশে নেমে এসেছে। সুতরাং এই টিকার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো জনস্বার্থবিরোধী অপপ্রচার। রিজভী সাহেব গতকালও আবার জনস্বার্থবিরোধী অপপ্রচার চালিয়েছেন যেটি বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই আমি তাকে বলবো আরেকটু বিশ্রাম নেয়ার জন্য।’

এর আগে বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাঙালি জাতি জাতিসত্ত্বা উন্মেষের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রথম এই বাঙালিদের জন্য একটি জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে বাংলা ভাষাভাষী এই অঞ্চলে অনেক স্বাধীন রাজা ছিল কিন্তু বাঙালিদের জন্য কোনো স্বাধীন রাষ্ট্র ছিল না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই বাঙালি স্বাধীন রাষ্ট্র রচিত হয়েছে। মানুষ সবসময় নিজের প্রাণ রক্ষা করতে চায়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু একটি ঘুমন্ত জাতিকে এমনভাবে উদ্বেলিত করেছিলেন যে মানুষ নিজের প্রাণকে তুচ্ছ মনে করে যুদ্ধে গেছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ রচিত হয়েছে।’

এটি দু:খজনক যে, আজকের এই দিনে স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী যখন আমরা উৎযাপন করছি তখনও স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি রাজনীতি করছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা দেশটাই চায়নি, তারা এখনও বাংলাদেশে আস্ফালন করে, রাজনীতি করে এবং বিএনপির মতো একটি বড় দল তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা করে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমাদের দেশে তারা অর্থাৎ যারা স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় শুধু বিরুদ্ধাচারণ করে, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুক্তিকামী মানুষের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছে, তারা এখনও রাজনীতি করে, তাদের রাজনীতি করার সুযোগটাও করে দিয়েছিল জিয়াউর রহমান। আপনাদের যারা জ্যেষ্ঠ তাদের মনে আছে যে, জামায়াতে ইসলামসহ এই ধর্মভিত্তিক রাজনীতি দলগুলো বঙ্গবন্ধু নিষিদ্ধ করেছিলেন। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করার পর এই ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে রাজনৈতিক করার অনুমতি দিয়েছিলেন। আর গোলাম আযম পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন। তার নাগরিকত্বটা ফিরিয়ে দিয়েছিল বিএনপি সরকার। এভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বাংলাদেশে পুনর্বাসিত করেছিল জিয়াউর রহমান।’

‘ইতিহাসকে ঠিক তথ্যনির্ভর করার জন্যে জিয়াউর রহমানসহ যারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের কুশীলব ছিল তাদের তাদের মুখোশ উন্মোচিত হওয়া প্রয়োজন, এটি আজকে সময়ের দাবি, অন্যথায় ইতিহাসের দায়টা আমরা এড়াতে পারবো না’ উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো: মুরাদ হাসান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী, কুশীলব এবং এ হত্যার সুবিধাভোগী পরবর্তীতে যিনি সেনাপ্রধান হয়েছেন সামরিক শাসক ও রাষ্ট্রপতি হয়েছেন সেই জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার করা এবং এর জন্য একটি কমিশন গঠন প্রয়োজন।’

সচিব মো: মকবুল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম থেকে দেশের প্রতিটি নাগরিকের জীবনাদর্শ শিক্ষার প্রয়োজন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতার দেখানো পথ ধরে চলতে পারলেই আসবে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি।

You may also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More