২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির শর্তগুলো না মানা পর্যন্ত তিনি ইরানের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলবেন না বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন গণমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান বাইডেন।
যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালে পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার শর্তে ইরানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল। তবে ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই চুক্তি বাতিল করে ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। ফলে ইরানও তার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসে।
ইরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়িয়ে চলছে এবং বলছে যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। এই সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রিয়্যাক্টর জ্বালানি তৈরির কাজে ব্যবহৃত হতে পারে তবে এই একই জিনিষ পারমাণবিক বোমা তৈরিতেও ব্যবহার হয়।
২০১৫ সালের যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্যের সাথে ইরানের একটি পরমাণু চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী- তেহরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কমিয়ে আনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের পারমানবিক প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করতে দেবে বলে একমত হয়েছিল।
এর বিনিময়ে তেহরানের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করা হয়। তবে ট্রাম্প ইরানকে নতুন একটি চুক্তিতে আসার জন্য আলোচনা করতে চাপ দেয় এবং এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়ে, ট্রাম্প ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে।
ট্রাম্প তেহরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর অনির্দিষ্টকালের জন্য নজরদারি রাখতে চেয়েছিলেন এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর উৎপাদনও থামিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ইরান তা প্রত্যাখ্যান করে।
২০১৯ সালের জুলাইয়ে, এটি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের শুদ্ধতার মাত্রা ৩.৬৭%-এর চেয়ে বাড়িয়ে চুক্তি লঙ্ঘন করেছে এবং এই বছরের জানুয়ারিতে ঘোষণা করেছে যে তারা ২০% পর্যন্ত বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রেখেছে। অস্ত্র তৈরি করতে ৯০% বিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের প্রয়োজন।
সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে সাংবাদিক, বাইডেনকে প্রশ্ন করেছিলেন যে, তিনি তেহরানকে আলোচনার টেবিলে ফেরাতে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেবেন কি না। বাইডেন এক কথায় জবাব দিয়েছেন, না।
এদিকে, আলী খামেনি বলেছেন যে এই চুক্তির আওতায় ইরানকে সব শর্তে ফিরিয়ে আনতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রথমে নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নিতে হবে। আমরা তাদের সবকিছু মূল্যায়ন করব, এবং যদি দেখি যে তারা এই বিশ্বস্ততার সাথে কাজ করছে, তাহলে আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতিতে ফিরে যাব।