কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এ কারাবিধি লঙ্ঘন করে বন্দীর সঙ্গে এক নারীর সাক্ষাতের মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধা দেয়ার ঘটনায় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার, জেলার ও ডেপুটি জেলারসহ ১১ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি কারা অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে জানা গেছে, হল মার্কের কারাবন্দী মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমদ বিধি লঙ্ঘন করে এক নারীর সঙ্গে সময় কাটানোর ঘটনায় সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায়, জেলার নূর মোহাম্মদ মৃধা ও ডেপুটি জেলার গোলাম সাকলায়েনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ছয়জন কারারক্ষী, একজন সহকারী প্রধান কারারক্ষী ও সার্জেন্ট ইনস্ট্রাক্টর বরখাস্ত হয়েছেন।
সুরক্ষা সেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. শহিদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, জেল সুপার ও জেলারকে ররখাস্ত করা হয়েছে।বাকিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইজিপি প্রিজনকে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি কারা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় জেল সুপার ও জেলারকে বরখাস্ত করতে পারে, আর বাকিদের আইজি প্রিজন্সই করতে পারে।
উল্লেখ্য দেশে করোনা মহামারীর মধ্যে কারাবন্দিদের সঙ্গে বাইরের কারও দেখা করার সুযোগ না থাকলেও গত মাসের শুরুতে কারা কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় তুষারের সঙ্গে এক নারীর সাক্ষাতের ভিডিও প্রকাশিত হলে তা নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, গত ৬ জানুয়ারি কাশিমপুর কারাগারের ভেতরে কর্মকর্তাদের অফিস এলাকায় কালো রংয়ের পোশাক পরে স্বাচ্ছন্দে ঘোরাফেরা করছিলেন কারাবন্দী হলমার্কের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ। তিনি আসার কিছু সময় পর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় ও ডেপুটি জেলার সাকলাইনের উপস্থিতিতেই বাইরে থেকে বেগুনি রংয়ের সালোয়ার কামিজ পরা এক নারী সেখানে প্রবেশ করেন। তাদের সহযোগিতার বিষয়টিও সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে।
পরে দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে অপর দুই যুবকের সঙ্গে ওই নারী কারাগারের কর্মকর্তাদের কক্ষ এলাকায় প্রবেশ করেন। তাকে সেখানে রিসিভ করেন ডেপুটি জেলার সাকলাইন। ওই নারী সেখানে প্রবেশ করার পর অফিস থেকে বেরিয়ে যান সাকলাইন। এর আনুমানিক ১০ মিনিট পর কারাগারে বন্দী তুষার আহমদকে সেখানে প্রবেশ করতে দেখা যায়।