ফ্রান্সে গিয়ে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার তথ্য পাওয়া গেছে বাংলাদেশের ইংলিশ মিডিয়াম পড়ুয়া শিক্ষার্থী সাইফ রহমান তোতন (২৪)-এর বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগে গ্রেফতারের পর ফ্রান্স পুলিশ তাকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট-সিটিটিসি। সিটিটিসির উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, সাইফ রহমানকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সে বাংলাদেশের কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিটিটিসি সূত্র জানায়, সাইফ রহমান ২০১৪ সালে ঢাকার ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড স্কুল থেকে এ লেভেল সম্পন্ন করেন। অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে ও লেভেল সম্পন্ন করে ২০১৬ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে ইউনিভার্সিটি অব ডি-সেরগি পন্টাইজে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
পড়াশোনা শেষ করে তিনি প্যারিসের ইউনিভার্সিটি অব প্যানথিয়ন আসাসে প্রশাসন শাখায় খণ্ডকালীন চাকরিতে যোগদান করেছিলেন।এ সময় তার মা জেরিন রহমানও তার সঙ্গে প্যারিসে অবস্থান করছিলেন। প্যারিসে থাকা অবস্থাতেই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন সাইফ।
কয়েক মাস আগে ফ্রান্স পুলিশ জঙ্গি সন্দেহে তাকে প্রথমে নজরদারি করতে শুরু করে। একপর্যায়ে তাকে বাসা থেকে আটক করে দেশটির পুলিশ। আটকের পর সাইফকে প্রায় দুই মাস প্যারিসের একটি ডিপোর্টেশন সেন্টার রাখা হয়।
ফ্রান্স পুলিশ জানিয়েছে, সাইফ প্যারিসে অবস্থানকালে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তার ব্যবহৃত ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস পরীক্ষা করে একাধিক জিহাদি গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগের প্রমাণ পেয়েছে। তবে সহিংস কোনও হামলার পরিকল্পনা করেছিল কিনা, এ বিষয়ে কোনও তথ্য পায়নি।
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, সাইফ আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছিলেন বলে তারা ধারণা করছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার সঙ্গে আর কোনও বাংলাদেশি নাগরিক জঙ্গিবাদে জড়িয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জানা গেছে, ঢাকার দোহারের বাসিন্দা সাইফের বাবার নাম লুৎফর রহমান। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান সাইফকে ফ্রান্স পুলিশ আটক করার পরপরই তার মা জেরিন রহমান তড়িঘড়ি দেশে চলে আসেন।