মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প সম্পর্কে বোমা ফাটিয়েছেন তারই সাবেক সহকারি স্টিফেন উইন্সটন ওলকফ। ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার পর দ্য ডেইলি বীস্ট পত্রিকায় লেখা এক নিবন্ধে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকাকে ধ্বংস করার সময় মেলেনিয়া তার পাশেই ছিল।
ক্যাপিটলের এ দাঙ্গায় পাঁচজন নিহত হয়। তাদের মধ্যে ট্রাম্পের এক সমর্থক মারাত্মকভাবে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে ও ক্যাপিটলের একজন পুলিশ অফিসার আগুন নির্বাপক দ্বারা মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতালে মারা যান।
তিনি লিখেন, এটা ছিল মানুষের জীবন ও আমাদের মহান গণতন্ত্রের উপর আক্রমণ। দূর্ভাগ্যবশত আমাদের প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডির এর কোনোটার প্রতিই ভ্রুক্ষেপ নেই। এ সহিংসতা ‘মর্মান্তিক, ভয়াবহ, হতাশাজনক ও লজ্জাজনক’।
তিনি নিজেকে ‘মেলেনিয়ার সহায়ক’ হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি ট্রাম্প দম্পতির প্রথম সময়কার একজন যিনি ‘তাদের অহংকারে ইন্ধন জুগিয়েছেন, হাত বুলিয়েছেন এবং জেনেবুঝে তাদের সত্যের প্রলেপ লাগানো হঠকারিতা ও বিষাক্ত মিথ্যার সাথে একমত হয়েছেন। মিথ্যা দিয়েই আয়নার এ ঘর তৈরি।’
ওলকোফ বলেন, ক্যাপিটলে হামলায় প্রেসিডেন্টের ভূমিকা নিয়ে তিনি বিস্মিত নন। তবে একটি টেলিপ্রম্পটারের সেরা পঠনে থেকেও ফার্স্ট লেডির নীরবতায় ক্ষুব্ধ তিনি।
ট্রাম্প দম্পতি ‘চরিত্রহীন ও নৈতিক মানদণ্ড নেই তাদের’। ফার্স্ট লেডিকে বিভিন্ন কাজে সহায়তা করার ক্ষেত্রে আমার উদ্দেশ্য সবসময় নিষ্কলুষ ছিল। আমি মেলেনার সাথে কাজ করে হতাশ ও লজ্জিত।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, ওলকোফ একসময় আনা উইনটোরের পার্টিগুলোতে কাজ করেছেন। ফার্স্ট লেডি প্রায় বিশ বছর আগে তার বন্ধু হয়েছিল। মেলেনিয়া যখন ট্রাম্পকে বিয়ে করে তখন তিনি সেখানে ছিলেন। ব্যারনের বেবি শোয়ারে কাজ করতেন তিনি।
প্রেসিডেন্টের অভিষেকের পরপরই তিনি ফার্স্ট লেডির সহকারি হিসেবে কাজ শুরু করেন। অভিষেকের পরিকল্পনায় তিনি সহায়তা করেন। মাত্র এক বছর পর তার শুরু করা প্রতিষ্ঠানে উদ্বোধনী কমিটি মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার প্রদান করলে তিনি ফার্স্ট লেডির সহকারি পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
ওলকোফ তার লেখায় সবকিছু বিস্তারিতভাবে লিখেন। শিরোনাম ছিল, মেলানিয়া ও আমি : ফার্স্ট লেডির সাথে আমার বন্ধুত্বের উত্থান ও পতন। সেপ্টেম্বরে লেখাটি প্রকাশ হয়। এসব লেখায় মেলানিয়া তার প্রাক্তন এ বন্ধুকে ‘অসাধু সুযোগবাদী’ বলে অভিহিত করেন।
তিনি আরো লিখেন, একজন বাবা গালিবাজ হলে মা কী করেন? অনেকে এখনো মনে করে মেলেনিয়া ক্ষমতাহীন। কিন্তু বোকা হবেন না। সেও সবচেয়ে খারাপ ধরনের একজন গালিবাজ। বাচ্চাদের সাথে যে সুন্দরভাবেই কথা বলে। অসুস্থতা ত্বকের নিচে থাকে।
মেলানিয়া ট্রাম্পকে জানে, আর তার দর্শনের সহায়ক। আপনি তাকে আঘাত দিলে সে আরো জোরালভাবে তা ফিরিয়ে দিবে। সে হচ্ছে আক্রমণাত্মক ব্যক্তি। সে বিদ্রুপ করতে পছন্দ করে আবার বিদ্রুপ সহ্যও করে। সে না দেখার ভান করে। বাস্তবতা হলো মেলেনিয়া আসলে তাকে এসবে উদ্বুদ্ধ করে। সেই ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় মনোরঞ্জক।
তিনি লিখেন, মনোযোগ দেয়ার ক্ষেত্রে মেলেনিয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে ভাল অবস্থানে নেই। তিনি অনেক শিশুদের জীবনে পরিবর্তন আনার জন্য একটি প্লাটফর্ম তৈরি করতে জীবনের খুব কম সুযোগই নষ্ট করেছেন। তবে তার একটাও তিনি করতে পারেননি।