ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
এশিয়ার বৃহত্তম কৃষি খামার হিসেবে খ্যাত ঝিনাইদহ জেলার দত্তনগর বীজ উৎপাদন খামারে এবার ৫০ একর জমির ৩ লক্ষাধিক টাকার ধানের বিচালি ও খড় গোপনে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে মথুরা বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে।
কোনো প্রকার কোটেশন, নিলাম, টেন্ডার ছাড়াই বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে এসব বিচালি ও খড় বিক্রি করা হয়েছে।
এর আগে প্রায় ৩ কোটি টাকার ধানবীজ গোপনে পাচার করার দায়ে ফার্মটির ৪ উপ-পরিচালক সাময়িক বরখাস্ত হয়। তবে বিখ্যাত এ খামারে দুর্নীতি যেন ক্রমেই আষ্ঠে পৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরছে। মথুরা বীজ উৎপাদন খামারে চলতি মরসুমের প্রায় ৫০ একর জমির ধানের বিচালি ও খড় ৬ হাজার টাকা একর দরে বিক্রি করা হয়েছে স্থানীয় কাছে।
স্থানীয় কয়েকজন বলছেন কোনো রকম কোটেশন, নোটিশ, টেন্ডার ছাড়াই ইচ্ছামাফিক এসব খড় বিচালি বিক্রি করা হয়েছে। দত্তনগর ফার্ম এলাকার মথুরার মাঝপাড়ার বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, একর প্রতি ৬ হাজার টাকা দরে ২৪ হাজার টাকা দিয়ে এবার মথুরা ফার্মের উপ-পরিচালক মজিবর রহমান খানের কাছ থেকে ৪ একর জমির বিচালি কিনেছেন। তবে কিছু টাকা বাকি থাকায় তাকে হয়রানি করার চেষ্টা করেছে।
এছাড়াও পোড়া পাড়া, গোকুলনগর পীরগাছার স্থানীয় আরও কয়েকজন বিচালি কিনেছেন। তবে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তি প্রত্যাশা করেছেন । তাদের অভিযোগ এসব খড়-বিচালি ফার্ম এলাকার মানুষের মধ্যে ফ্রি দেয়ার কথা। ফার্ম স্থাপনের সময় যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। তখনই শর্ত ছিলো জনস্বার্থে স্থাপিত এ ফার্মে স্থানীয়রা অগ্রাধিকার পাবে, অথচ এর কিছুই মানেন না কর্মকর্তারা।
এলাকাবাসী বলছেন, খড়-বিচালি গরুর খাবার, পানের বরজ, তামাক পোড়ানোসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে মানুষ ব্যবহার করে। স্থানীয়ভাবে এর বেশ চাহিদা রয়েছে। এশিয়ার বৃহত্তম কৃষি খামার খ্যাত দত্তনগর খামারের মথুরা বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক মজিবর রহমান খানের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ উঠেছে। তিনি নিজে বাসায় দুইটা গাভী গরু পালন করেন। যা খুবই মোটা তাজা অথচ ফার্মের গরুগুলো রুগ্ন ও মরণাপন্ন অবস্থায় বেঁচে আছে। তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের সাথে খারাপ আচরণের অভিযোগও উঠেছে। এমনকি সংবাদকর্মীদের সাথেও তিনি কথা বলতে চান না বলে সংবাদকর্মীদেরও অভিযোগ আছে।
ফার্মের নিজস্ব মেশিন থাকা সত্ত্বেও বাইরে থেকে মেশিন ভাড়া করা, ভাড়া মেশিনের পাশাপাশি শ্রমিক দিয়ে ধান কাটানো, শ্রমিকদের মজুরি বেশি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। অবশ্য দুর্নীতির কথা অস্বীকার করে বিষয়টিকে স্রেফ অপপ্রচার বলে দাবি করেছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মথুরা বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান খান সবুজ বলেন, আমি বিচালি বিক্রয়ের ব্যাপারে কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে ওঠা সকল প্রকার অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ সঠিক নয়। স্থানীয়রা সুবিধা না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে ।