মাত্র দুই মাস আগে বিয়ে করে মহাখালীর সাততলা বস্তিতে সুখের সংসার পেতেছিলেন বীথি রানী। কিন্তু আগুন তার সুখের সংসারকে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) সকালে পুড়ে যাওয়া আসবাবপত্রের ভেতর থেকে বিয়ের বেনারসি শাড়িটি বের করেন তিনি।
শাড়িটি পুড়ে যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়া বিথী রানী বলেন, তার ঘরে অবশিষ্ট আর কিছু নেই। আগুন সব কেড়ে নিয়েছে। আজ দিনে কী খাবেন সেই টাকাও তাদের কাছে নেই।
গতকাল সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত পড়াশোনা করে ঘুমিয়েছিল মহাখালীর একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী তানিয়া। রাতে ঘরে আগুন লাগার পর পরিবারের সবার সঙ্গে বের হয়। কিন্তু বইগুলো সঙ্গে নিতে পারেনি।
আজ সকালে ঘরে ফিরে বইগুলো খুঁজে বের করে তানিয়া। দেখা যায়, অধিকাংশ বই পুড়ে গেছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তানিয়া তার মাকে বলে, ‘আমার বইগুলো পুড়ে গেছে মা।’
আগুনে রায়হান মন্ডলের মুদি দোকান এবং বসতঘর পুড়েছে। আজ সকালে সূর্য ওঠার পর দোকানের ভেতর পুড়ে যাওয়া মালামাল ঘাঁটাঘাঁটি করছিলেন তিনি।
রায়হান বলেন, এই বস্তিতে দোকানের পেছনেই আমার বসতঘর ছিল। রাত সাড়ে ১১টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাসায় ছেলেমেয়েদের নিয়ে ভাত খাচ্ছিলাম। এ সময় বস্তিতে আগুন-আগুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সবাই দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। মুহূর্তমধ্যে পুরো বস্তিতে আগুন লেগে যায়।
উল্লেখ্য, সোমবার (২৩ নভেম্বর) রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর মহাখালীতে সাততলা বস্তিতে আগুনের সূত্রপাত। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে ৬০-৭০টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের তেজগাঁও স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মাহমুদুল হাসান বলেন, সাততলা বস্তির ওই অংশের ৬০ থেকে ৭০টি দোকান পুড়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট অথবা গ্যাস লিকেজ থেকে এই আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে। তদন্ত চলছে।