শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে প্রাণঘাতী মহামারী করোনা ভাইরাস। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্পান এবং দীর্ঘস্থায়ী বন্যা সার্বিক অবস্থাকে আরো কঠিন করেছে। সেই কারণে গত মে মাসে সামার–২০২০ সেমিস্টারের ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের সহায়তায় গঠিত ১৫ কোটির (১.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) ‘স্টুডেন্ট অ্যাসিসটেন্স ফান্ড’ ফল সেমিস্টারেও চলমান রাখার ঘোষণা দিয়েছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টির নিজস্ব অনলাইন শিক্ষণ প্লাটফর্ম ‘বিইউএক্স’কে আরো সহজবোধ্য ও উন্নতি সাধনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বর্তমান পরিস্হিতিতে, অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি প্রশাসন চলমান সেমিস্টারে স্টুডেন্ট অ্যাসিসটেন্স ফান্ডকে বাড়িয়ে ২৩ কোটি টাকায় (২.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থী নন–টিউশন ফির ক্ষেত্রে পূর্ণ ওয়েভার ও ১০ শতাংশ টিউশন স্কলারশিপ সুবিধা পাবেন। এছাড়া বিশেষ ক্ষেত্রে ১০ থেকে শুরু করে পূর্ণ টিউশন স্কলারশিপ পাওয়ারও সুযোগ থাকবে।
এদিকে, করোনা মহামারিতে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গত জুনে হার্ভার্ড–এমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে ‘বিউইএক্স’ নামে বিশ্বমানের নিজস্ব ইন–হাউজ অনলাইন লার্নিং প্লাটফর্ম তৈরি করে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। নতুন সেমিস্টারেএই প্লাটফর্মের আরো উন্নতি সাধন করার ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালটির উপাচার্য প্রফেসর ভিনসেন্ট চ্যাং, পিএইচডি।
‘স্টুডেন্ট অ্যাসিসটেন্স ফান্ড’ ও ‘বিউইএক্স’ এর উপযোগিতা প্রসঙ্গে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ভিনসেন্ট চ্যাং, পিএইচডি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদেরই আমরা সবোর্চ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। বিইউএক্স হলো ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভার্চুয়াল ক্যাম্পাসের ‘এক্স ফ্যাক্টর’। দূরবর্তী শিক্ষণ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন এবং এটা যাতে শিক্ষার্থীদের জন্য জন্য আরো সহজবোধ্য হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, সকল শিক্ষার্থী যাতে স্টুডেন্ট অ্যাসিসটেন্স ফান্ড ও বিইউএক্স এর সুবিধা ভোগ করতে পারে। ’
প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারি মাসেই করোনা ভাইরাসের প্রকোপ সম্পর্কে আঁচ করতে পারে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি কতৃপক্ষ। বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে ১৯ ফেব্রয়ারি ২০২০ শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ বিষয়ে ‘ইন্সটিটিউট অফ এপিডেমোলোজি ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ’ (আইইডিসিআর) এর তৎকালীন ডিরেক্টর মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরাকে ‘আউটব্রেক অফ করোনা ভাইরাস ডিজিজ ২০১৯ (কোভিড–১৯)’ শীর্ষক সেমিনারে আমন্ত্রণ জানান উপাচার্য ভিনসেন্ট চ্যাং। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের আগ পর্যন্ত সবার তাপমাত্রা মেপে ক্যাম্পাসে প্রবেশ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ কার্যক্রমণ শুরু করে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি।