মৌলভীবাজারের সোনাপুরে সাংবাদিকের বাসায় নৈশভোজে নিয়ে গাঁজা খাইয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তুষার নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে।
৩ আগস্ট রাতে এই ঘটনা ঘটলেও ৩১ আগস্ট সদর মডেল থানায় তিন জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনা ঘটার ২৭ দিন পর এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ওই তরুণী সোমবার রাতে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ এনে ফেসবুকে ‘আপত্তিকর’ ছবি পোস্ট করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও একটি মামলা করেছেন।
ধর্ষণের শিকার তরুণী বলেন, ‘আমার পূর্বপরিচিত তুষারের সাথে আমি একটি ডিনার পার্টিতে গিয়েছিলাম। সেখানে সে আমাকে গাঁজা খাইয়ে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে রেখেছিল, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ ঘটনায় তাকে সহায়তা করে মারজিয়া প্রভা ও রায়হান আনছারী।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি প্রথমে গাঁজা খেতে চাইনি, প্রভা ও রায়হান ভাই বলায় খেয়েছিলাম। কিন্তু অল্প খেয়েই আমার শরীর খারাপ লাগছিল। সেখানে সাধারণ সিগারেটের কথা বলে মাস্টারমাইন্ড ধর্ষক তুষার আমাকে গাঁজা খাইয়েছে। পরে শরীর দুর্বল হলে ঘুমাতে চাই তখন তুষার একটা বেডরুমে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
সাংবাদিক মাহমুদ এইচ খান বলেন, ‘আমার বাসাতে মারজিয়া প্রভাকে গেস্ট করেছিলাম। সেখানে সে ডিনার পার্টি করতে চাওয়ায় আমি সম্মতি দিই। তুষার একটি মেয়েকে নিয়ে আসবে, এখানে তুষার গাঁজা নিয়ে আসবে, এসবের কিছুই প্রভা আমাকে আগে জানায়নি।’
ধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি হলেন- শহরের বড়হাট এলাকার সজীব তুষার (২৩), সহযোগী হিসেবে ঢাকার মোহাম্মদপুরের মারজিয়া প্রভা ও মৌলভীবাজার কলিমাবাদের রায়হান আনছারীকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা অন্য মামলার আসামি হলেন- মৌলভীবাজার কাজীর গাঁও এলাকার মোস্তফা কামাল খান (২৪)।
এদিকে, মামলার পূর্বেই সামাজিক মাধ্যমে রটে যাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে সজিব তুষারকে এবং রায়হান আনসারীকে নিজ নিজ সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এ ব্যাপারে প্রধান আসামি তুষার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মামলা হয়েছে, ওয়ারেন্ট এসেছে। শিগগিরই আত্মসমর্পণ করে আইনের কাছে সোপর্দ করব নিজেকে। যদি আমি অপরাধী প্রমাণিত হই তবে নিজের জন্য ক্ষমা নয়, বরং নিজের সর্বোচ্চ বিচারই চাইব। কিন্তু যদি আমি নির্দোষ প্রমাণিত হই, তবে আমার সাথে যারা এই ঘৃণ্য অপরাধ করলেন, আপনাদের সবাই’কে আমি নিঃশর্তে ক্ষমা করে গেলাম।’
মামলার বাদী ধর্ষণের শিকার মেয়েটি জানান, আমি প্রথমে পরিবারের মানসম্মান ও সামাজিক অবস্থান চিন্তা করে তখন মামলা করিনি। আমার পরিবারকে জানানোর পর তারাও মামলায় সম্মতি দেয়নি। পরে যখন দেখলাম আমাকে উল্টো দোষ দেওয়া হচ্ছে এবং একটি ধর্ষণের ঘটনাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে তখন আমার কাছে বেশি আঘাত লাগে। পরে পরিবারের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে এখন আমি মামলা করেছি।