অনেকেই বলে থাকেন, ক্যান্সার হ্যাজ নো অ্যানসার। পৃথিবীতে প্রতি বছর এই জটিল রোগে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।
তবে রোগীর শরীরে ক্যান্সার যদি প্রাথমিকভাবে ধরা পড়ে তাহলে চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে বাঁচায়ে তোলা সম্ভব হয়।
তবে এমন কিছু ক্যান্সার রয়েছে যেগুলো সাধারণত প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে না। এমনই ৭ ধরনের ক্যান্সার সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
কিডনির ক্যান্সার:
এই ক্যান্সারের উপসর্গগুলি হল- পিঠের নীচের দিকে যন্ত্রণা, সারাক্ষণ ক্লান্তি ভাব, আচমকা ওজন অস্বাভাবিক কমে যাওয়া এবং মূত্রের সঙ্গে রক্তপাত।
অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার:
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সারা দেশে ক্যান্সার আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র ২ শতাংশ অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। অথচ ব্রেস্ট ক্যান্সারের তুলনায় এতেই বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার বা প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার শনাক্ত করা বেশ কঠিন। কারণ, অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও সাধারণ জন্ডিসের মতোই উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
প্রাথমিকভাবে খুব একটা ব্যথার উপলব্ধি হয় না। তেমন কোনও উপসর্গও প্রকাশ পায় না।
সার্কোমা ক্যান্সার:
শরীরের বিভিন্ন টিস্যু যেমন পেশী, চর্বি, ত্বকের গভীরের কোষ, হাড় বা তরুনাস্থিতে বাসা বাঁধে সার্কোমা ক্যান্সার।
প্রাথমিক পর্যায়ে এই ক্যান্সারের তেমন কোনও উপসর্গ প্রকাশ পায় না। এই ধরণের ক্যান্সার সাধারণত শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
এই ক্যান্সার সাধারণত দ্বিতীয় বা তৃতীয় পর্যায়ে চলে যাবার পর বায়োপসির মাধ্যমে শনাক্ত করা যায়। অন্য কোনও পরীক্ষার মাধ্যমে সার্কোমা ক্যান্সার শনাক্ত করা যায় না।
ফুসফুসের ক্যান্সার:
ফুসফুসের ক্যান্সার বা লাং ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ার পড়েই সাধারণত ধরা পড়ে। শুরুর দিকে তেমন কোনও বিশেষ উপসর্গও থাকে না।
শুধু তাই নয়, চেস্ট এক্সরেতেও ফুসফুসের ক্যান্সার ধরা পড়ে না। পিইটি বা সিটি স্ক্যানে একমাত্র ধরা পড়তে পারে।
জরায়ুর ক্যান্সার:
নারীরা যেসব ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন তার মধ্যে মাত্র ৩ শতাংশ জরায়ুর ক্যান্সার বা ওভারিয়ান ক্যান্সার। কিন্তু মাত্র ২০ শতাংশ ওভারিয়ান ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা যায়।
কারণ, তৃতীয় বা চতুর্থ পর্যায়ের পর ওভারিয়ান ক্যান্সার সাধারণত ধরা পড়ে।
আরো পড়ুন:
রাতে ঘুমানোর আগে মুখ ধোয়া কেনো জরুরি
দাঁড়িয়ে খাবার খেলে যে সব ক্ষতি হতে পারে
লিভার ক্যান্সার:
লিভার বা যকৃতের ক্যান্সারের উপসর্গ একেবারে একেবারে শেষের দিকে বোঝা যায়। যে কারণে শুরুতে এটি শনাক্ত করা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না।
লিভারের বেশিরভাগ অংশই পাঁজরের নীচে ঢাকা থাকে। যাদের মদ্যপানের অভ্যাস রয়েছে বা লিভার সিরোসিস রয়েছে, তাদের লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি।
ব্রেন টিউমার:
মস্তিষ্ক এবং সুষুম্নাকাণ্ডের টিউমার তখনই শনাক্ত করা যায় যখন তার উপসর্গগুলি প্রকাশ পায়। যেমন, হাত কাঁপা, মাথাব্যথা, কথা জড়িয়ে যাওয়া, ব্যক্তিত্বে সূক্ষ্ম পরিবর্তন।
কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, আক্রান্তরা উপসর্গগুলিকে তেমন একটা গুরুত্ব দেন না।
সাধারণত এমআরআই বা মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যান ছাড়া ব্রেন ক্যান্সার ধরা পড়ে না।
উপরের এই ৭ ধরনের ক্যান্সার অত্যন্ত মারাত্মক। আর তাই এর উপসর্গগুলো অল্পমাত্রায় অনুভুত হলেও অবহেলা করা ঠিক না।
সূত্র: বোল্ডস্কাই