ঢাকা: পবিত্র আশুরার তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসেনি দালানে বোমা হামলা মামলার বিচার পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি। বর্তমানে মামলাটি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইবুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালতে বিচারধীন রয়েছে। মামলাটিতে ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর সর্বশেষ সাক্ষ্য নেন আদালত। পরে আইনি জটিলতার কারণে আর কোনো সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করতে পারেননি আদালত।
অভিযোগপত্রে দুই নাবালককে সাবালক দেখানোর কারণে ২২ মাস ধরে সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত রয়েছে। এক আসামি নাবালক প্রমাণিত হওয়ার পর আরেক আসামিকে নাবালক দাবি করেছেন তার আইনজীবী। পরে ওই দুই কিশোরকে নাবালক হিসেবেই সম্পৃক্ত চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। এরপর আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার জাকির জানান, মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে। দুই আসামি নাবালক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। বিচারের জন্য সম্পূরক চার্জশিট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলি করা হয়েছে। এ কারণে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ বন্ধ ছিল। চলমান করোনাভাইরাসে মামলার কার্যক্রম কিছুটা ব্যহত হলেও ফের আদালত বসছে।
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, মামলার চার্জশিটে ত্রুটি ছিল। দুই নাবালককে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাবালক করে চার্জশিট দিয়েছেন। মূলত তদন্ত কর্মকর্তার ত্রুটির কারণে মামলটির বিচারকাজ এগোচ্ছিল না। সম্প্রতি তদন্ত কর্মকর্তা দুই নাবালকের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দিয়েছেন। কিন্তু নাবালকদের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া যাবে না। এর কারণে আবারও বিচার আটকে যেতে পারে।
জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৪ অক্টোবর তাজিয়া মিছিলের জন্য হোসেনি দালান ইমামবাড়ায় সমবেত হলে জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) জঙ্গিরা বোমা হামলা চালায়। এতে দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। ওই ঘটনায় রাজধানীর চকবাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা করেন।
এ মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি ১০ জন হলেন- শাহাদাৎ, আবদুল বাকি আলাউদ্দিন, সাঈদ ওরফে হিরন ওরফে কামাল, জাহিদ হাসান, আরমান, রুবেল ইসলাম, কবির হোসেন, মাসুদ রানা, হাফেজ আহসান উল্লাহ মাহমুদ, আবু সাঈদ সোলায়মান ওরফে সালমান, শাহ জালাল, চাঁন মিয়া ও ওমর ফারুক ওরফে মানিক। এর মধ্যে ওমর ফারুক, শাহ জালাল, হাফেজ আহসান উল্লাহ মাহমুদ ও চাঁন মিয়া জামিনে আছেন। আর ছয়জন রয়েছেন কারাগারে।