সন্ধ্যা ৭:৩৪ সোমবার ২২শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ১৬ই জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি

হোম প্রবাস ভারতের কারাগারে আটক ২৫ বাংলাদেশিকে মুক্তির আদেশ

ভারতের কারাগারে আটক ২৫ বাংলাদেশিকে মুক্তির আদেশ

লিখেছেন kajol khan
kurigram_durantobd
Spread the love

 

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

ভ্রমণ ভিসায় ভারতে গিয়ে করোনাকালে ভারতের জেলে আটক ২৫ বাংলাদেশিকে মুক্তির আদেশ দিয়েছে ভারতের আদালত। শনিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে ভারতের ধুবড়ি আদালত এই আদেশ দেয়।

ভারতের গোহাটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের সহকারী হাইকমিশনার তানভির রসূল ও ভারতের কারাগারে আটক বাংলাদেশিদের মুক্তিতে সহায়তাকারী, ধুবড়ির সাবেক বাম নেতা উজ্জ্বল ভৌমিকের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রেল-নৌ,যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণ কমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সাবেক সভাপতি ও সংগঠক নাহিদ হাসান নলেজ।

এর আগে গত ৩ মে দেশে ফেরার সময় ভ্রমণ ভিসা নিয়ে ভারতে যাওয়া ২৬ বাংলাদেশিকে আটক করে ভারতের ধুবড়ি পুলিশ। এদের একজন ভারতে কারা হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাদের সকলের বাড়ি কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায়।

নাহিদ হাসান নলেজ জানান, বৈধ ভিসায় ভারতে গিয়ে করোনাকালে আইনের বেড়াজালে আটক ২৫ বাংলাদেশি প্রায় সাড়ে তিনমাস ভারতের কারাগারে আটক থাকার পর ভারতের ধুবড়ি আদালত তাদের মুক্তির আদেশ দিয়েছেন। ভারতের হাইকোর্টের আইনজীবী অসীম দাস গুপ্ত এবং ধুবড়ি আদালতের আইনজীবী রাজস্বী দাস গুপ্ত আটক বাংলাদেশিদের পক্ষে আইনি লড়াই করেছেন। বাকি আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে আর দুই একদিনের মধ্যে তারা কারামুক্ত হয়ে দেশে ফিরতে পারবেন বলে আশা করছি।

ভারতে আটক ২৫ বাংলাদেশির মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া এই সংগঠক বলেন,‘ ইতোমধ্যে আটককৃতদের পরিবার তাদের মুক্তি আদেশের খবর পেয়েছে। সন্তানকে ফিরে পাবার জন্য মায়ের আকুতি, স্বামীকে ফিরে পাবার জন্য স্ত্রীর আকুতি আর পিতাকে ফিরে পাবার জন্য সন্তানের যে আকুতি তা ভাষায় প্রকাশ করবার নয়। পরিবারগুলো প্রায় সাড়ে তিনমাস পর আজ প্রশান্তির নিঃল্বাস ছাড়লো।’

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সময় কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের ২৬ বাংলাদেশি ভারতে যান। বৈধ পাসপোর্ট ও ভ্রমণ ভিসা থাকলেও ভারতে দ্বিতীয় ধাপের লকডাউন চলার মধ্যে গত ২ মে ওই ২৬ জন বাংলাদেশি দু’টি মিনিবাসে আসামের জোরহাট জেলা থেকে দেশে ফেরার উদ্দেশে রওনা দেন। পশ্চিমবঙ্গের চেংরাবান্ধা চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে ফেরার চেষ্টা ছিল তাদের। ভারতে জেলে ও খামারকর্মী হিসেবে কাজ করা এসব বাংলাদেশিকে পরদিন (৩ মে) সকালে বাহালপুর এলাকা থেকে আটক করে আসামের ধুবড়ি জেলা পুলিশ। করোনা পরীক্ষার পর তাদের পাঠানো হয় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে।

গত ৫ মে ওই ২৬ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং ফরেনার্স (সংশোধিত) অ্যাক্ট, ২০০৪ এবং পাসপোর্ট অ্যাক্ট, ১৯৬৭’র ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দেশটির পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাসপোর্টধারী এসব বাংলাদেশি টি-ওয়ান ভিসা নিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। এই ভিসাধারীদের কাজের অনুমতি না থাকলেও আসাম পুলিশের অভিযোগ, এই বাংলাদেশিরা রাজ্যের জোরহাট, গোলাঘাট ও শিবসাগর এলাকায় কর্মসংস্থান কার্যক্রমে যুক্ত থেকে ভিসার শর্ত ভঙ্গ করেছেন। তাদের মুক্তির দাবিতে কুড়িগ্রামে একাধিকবার মানববন্ধন করেন আটক ব্যক্তিদের স্বজনরা।

এরমধ্যে গত ১ জুলাই কারা হেফাজতে বকুল মিয়া নামে এক বাংলাদেশি মারা গেলে চারদিন পর তার মরদেহ দেশে স্বজনদের কাছে ফেরত পাঠানো হয়। অপর ২৫ বাংলাদেশি এখনও ভারতের কারাগারে অন্তরিন জীবন যাপন করছেন।

গতকাল (২৯আগস্ট) তাদের মুক্তির আদেশ দিয়েছে সে দেশের আদালত। তাদের ফেরার অপেক্ষায় স্বজনরা।

You may also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More