খেলার জন্য আপনার আদরের সোনামনির হাতে স্মার্ট ফোনটি তুলে দিচ্ছেন নাতো?
যদি একবার দিয়ে অভ্যাস করে ফেলেন তা হলে জেনে রাখুন নিজ হাতে আপনার সন্তানের জীবন ধ্বংস করেছেন আপনি।
আর সাময়িক আনন্দের জন্য এই ভয়াবহ কাজটি বেশি ভাগ করে থাকেন মায়েরা। আর ছেলের বিপদ ডেকে পরে সামলাতে না পেরে কান্না ও করেন বেশি সেই মায়েরা।
আমার ছেলে মিরাজ পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। মোবাইল ছাড়া ১ বেলাও ভাত খেতে পারে না। মেয়ে মালিহা নার্সারিতে পড়ে। তার ও একই অবস্থা। আরেক ছেলে মাহাথির ২বছরের কাছাকাছি বয়স। সে ও গজল না শুনলে কোন খাওয়াই মুখে তুলেনা।
আমি শুধু আমার ঘরের টা দেখি বলে বললাম। এমন ঘটনা এখন ঘরে ঘরে চলছে। তার পর ধরুন ১০ থেকে ১২/১৩ বছরের ছেলে মেয়েরা প্রচণ্ড ভাবে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে। বিভিন্ন গেইম আর ইউটিউবে ওল্টা পাল্টা ভিডিও দেখে দেখে লিখা পড়া বাদ দিয়ে সারা দিন মোবাইল নিয়েই পড়ে থাকে।
সমাজের কোমল মতি ছেলে মেয়েদের এমন ধ্বংসের জন্য দায়ী কিছু বাবা মা। তারা অল্প বয়সে ছেলে মেয়েদের হাতে মোবাইল তুলে দিয়ে বিপদ ডেকে আনছেন নিজে। আমাদের মা বাবাদের এখন থেকে সাবধান হতে না পারলে সামনে দিন গুলো আরো কঠিন হয়ে দেখা দিবে। আপনার সন্তানের বয়স ১৫/১৬ বছর হয়ে গেলে আর কন্ট্রোল করতে পারবেন না।
আমার মামার এক ছেলে এক মেয়ে। সারা জীবন সৌদি আরবে কাটিয়েছেন ছেলে মেয়েদের ভালো রাখার জন্য। এক ছেলে হওয়ায় ভালো পড়াশোনা করার জন্য গ্রাম থেকে ঢাকা চলে আসে। মতিঝিল একটি ভালো স্কুল থেকে এস এস সি তে ভালো রেজাল্ট ও করে। সমস্যা শুরু হয় কলেজ ভর্তির পর। সারা দিন মোবাইল আর মোবাইল। মোবাইল ছাড়া কিছুই বুঝে না। মামা আমাকে অনেক বার ফোন করেছেন সৌদি আরব থেকে তার ছেলে কে বুঝানোর জন্য। আমি মোবাইলে কল দিলে কখনো সে ধরে না। তাই আমি আর গুরুত্ব দেই নাই। মামার আবারও আকুতি আমি যেন বাসায় গিয়ে বুঝিয়ে আসি। অফিসের ব্যস্ততা ও বাসা দূরে হওয়ায় আমার আর যাওয়া হল না। মামা বললেন সারা দিন মোবাইল নিয়ে ঘুরে বলে রাগ করে তার বই খাতা গুলো বস্তায় ভরে রেখে দিল তবুও সে ১ মাসে তার বই গুলো বস্তা থেকে বের করে নাই।
সে মামাটা গত কোরবানির ঈদের ১ দিন আগে সৌদিতেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
যে ছেলের সুখের জন্য জীবনের শেষ দিন গুলো বিদেশে কাটিয়েছেন সে সন্তান হয়তো এখন বুঝবে বাবা কি ছিল। সন্তানের এমন অধঃপতন মামা সহ্য করতে পারতেন না বলে শুধু কান্না করতেন।
সমাজে এমন উদাহরণ অনেক অনেক আছে।
তাই আসুন আমরা এখন থেকে সচেতন হই নইলে আপনার আমার সন্তানের জন্য ও মামার মত সারা জীবন কাঁদতে হবে।
(লেখক: সালেহ মোবিন, আইটি প্রফেশনাল)