বিকাল ৩:৩১ সোমবার ২২শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ১৬ই জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি

হোম ফেসবুক কর্নার প্রিয়াংকা বিশ্বাসের কাঠগড়ায় ‘উস্তাদ হোটেল’

প্রিয়াংকা বিশ্বাসের কাঠগড়ায় ‘উস্তাদ হোটেল’

লিখেছেন kajol khan
ostad_durantobd
Spread the love

মুভি : উস্তাদ হোটেল (২০১২)
পরিচালক :আনোয়ার রশিদ
আইএমডিবি রেটিং : ৮.৩/১০

জয় গোস্বামী বলেছিলেন : ‘এক পৃথিবী লিখব বলে একটি খাতাও শেষ করিনি ।’

ঠিক এই কথাটা যদি কোন সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি লুফে নেয় তো চমকে যাবেন না । নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন কাদের কথা বলছি! হ্যাঁ, মালায়লম ইন্ডাস্ট্রি। যারা পুরো এক পৃথিবী গল্প নিয়ে বসে আছে ; আটপৌরে, শ্বাসরুদ্ধকর, অমায়িক সব গল্প।

আজ বলবো ‘উস্তাদ হোটেল’ এর গল্প।

দুলকার সালমান অভিনীত ‘উস্তাদ হোটেল’কে একবাক্যে তিন পুরুষের গল্প হিসেবে আখ্যায়িত করা যায় । দাদা-পুত্র-দৌহিত্রর ত্রিকোণ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নির্মিত মুভির মূল গতিপথ।

আব্দুল রাজ্জাক সাহেবের ছিল পুত্র সন্তান প্রাপ্তির আকাঙ্খা। অতঃপর চারবার কন্যা সন্তানের মুখ দেখার পর পঞ্চমবারে তার স্বপ্ন পূরণ হয়। তার ঘর আলো করে জন্ম নেয় পুত্র ফায়জি (দুলকার), কিন্তু তার মাকে বাঁচান সম্ভব হয়না। ফায়জি চারবোনের তুমুল আদরে তাদের খেলার সঙ্গী হয়ে বেড়ে উঠতে থাকে । বোনেদের সান্নিধ্যে থাকায় শিশুকাল থেকেই রান্নাঘর তার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় যা ছিল তাদের পিতার চোখে দৃষ্টিকটু। এরমাঝে আব্দুল রাজ্জাক তার পাঁচ সন্তানকে নিয়ে দুবাই পাড়ি জমান এবং সেখানে ব্যবসা শুরু করে সুনাম অর্জন করেন।

শুরুতেই বলেছি এটা তিন পুরুষের গল্প। সেই অনুযায়ী করিম ইক্কা প্রসঙ্গে একটু বলি। তিনি একজন খ্যাতিমান বাবুর্চি , টার হাতের বিরিয়ানির সুখ্যাতি ছড়িয়ে আছে পুরো শহর জুড়ে। করিম ইক্কা একটি বিশেষ নীতিতে বিশ্বাস করে চলেন ।
তা হল :

”যে কেউ অন্যের পেট ভরানোর খবর রাখে। কিন্তু তাদের মন ভরানোর ক্ষমতা থাকে কয়জনের !”
এই সত্যভাষণের অন্তরালে জীবনদর্শনের মূলসুরটা ভেসে রয়েছে। কেরালার কোন এক সাগর পাড়ের ছোট্ট একটি হোটেলের মালিক এই করিম ইক্কা। তার হোটেল প্রতিদিন লেগে থাকে উপচে পড়া ভীড়। এই ‘উস্তাদ হোটেল’ এর পাশেই ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে ‘বীচ বে ইন্টারন্যাশনাল’ নামক পাঁচ তারকা হোটেল। তাদের সিগনেচার ডিশ ‘মালাবারি বিরিয়ানি’।

মজার বিষয় হলো এই বিরিয়ানির কারিগর এই উস্তাদ হোটেলের মালিক করিম ইক্কা । করিম ইক্কার একমাত্র পুত্র নিজেকে বাবুর্চির ছেলে হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জা পায় এবং পিতার গন্ডি থেকে বের হয়ে জীবনের গতি খুঁজে নেয় । আর এই করিম ইক্কার একমাত্র নাতি ‘ফায়জি’, যার রান্নার হাত তার দাদার মতই প্রসিদ্ধ।

ফায়জির স্বপ্ন ‘শেফ’ হওয়ার এবং এই পেশাজনিত জটিলতার মুখোমুখি হয়ে শুরু হয় পিতা-পুত্রের দ্বন্দ্ব। যে মানুষ নিজেকে বাবুর্চির ছেলে হিসেবে স্বীকার করে নি, সে কিভাবে নিজেকে বাবুর্চির পিতারূপে মেনে নিবে ! দ্বন্দ্বের রোষানলে ফায়জির ক্যারিয়ারজনিত স্বপ্ন ভেঙে পড়ার উপক্রম হয় এবং সে অভিমান লুকিয়ে দাদার কাছে চলে আসে।
এখানে এসে তার উপলব্ধির জগতে আমুল পরিবর্তন আসে, সে বুঝতে পারে পুঁথিগত বিদ্যা আর হাতে-কলমে শিক্ষার পার্থক্য ।

অপরদিকে ব্যাংকে ঋণ পরিশোধ জনিত ঝামেলার মুখোমুখি হয়ে উস্তাদ হোটেল দেউলিয়া হতে চলেছে। কি করবে এখন ফায়জি? প্রাণাধিক প্রিয় দাদার স্বপ্নের উস্তাদ হোটেলকে রক্ষা করবে নাকি প্যারিসের এক্সিকিউটিভ শেফের লোভনীয় চাকরির অফারটি লুফে নেবে? উত্তর জানতে হলে দেখে ফেলুন ‘উস্তাদ হোটেল’ নামক চমৎকার স্বপ্ন ছোঁয়ার কাহিনী ।

(লেখক: প্রিয়াংকা বিশ্বাস, সাবেক শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)

You may also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More