দেহের অর্ধেক ওজনের টিউমার হয় মধ্যবয়স্ক দিল্লির এক মহিলার শরীরে। এই মহিলা শেষ কিছু মাস ধরে ওজন বেড়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছিলেন। অস্ত্রোপচারের আগে তাঁর ওজন দাঁড়িয়েছিল ১০৬ কেজিতে। এর পর তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। সেই সঙ্গে তলপেটের তীব্র ব্যাথা হতে থাকে। হাঁটতে এবং ঘুমাতেও সমস্যা শুরু হয়।
হঠাৎ করে ওজন বেড়ে যাওয়ায় প্রথমে স্থানীয় এক চিকিৎসকে দেখান। তিনি ওই রোগীকে অ্যাপোলো হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থের অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসক অরুণ প্রসাদ জানিয়েছেন, ওই মহিলার ডিম্বাশয়ে একটি বড় আকারের টিউমার ধরা পড়ে।
টিউমারটি রোগীর অন্ত্রের উপর চাপ সৃষ্টি করছিল, যার ফলে পেট ব্যথা এবং খাদ্য হজম করতে পারছিলেন না তিনি। এর সঙ্গে ওই মহিলার হিমোগ্লোবিন কমে যায়। প্রায় ৬-এ চলে আসে। গত ১৮ অগস্ট চিকিৎসকের দল সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় ৫০ কেজি ওজনের টিউমার অস্ত্রপচার করে রোগীর ডিম্বাশয় থেকে।
দিল্লির এক হাসপাতালে এই সফল অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। তাঁদের দাবি, বিশ্বের মধ্যে এ ধরনে বড় টিউমার অস্ত্রোপচার এই প্রথমবার হল। যার ওজন দাঁড়িয়েছিল ১০৬ কেজি।
প্রথাগত রীতিতেই ওই মহিলার অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল কারণ রোগীর পেটে ল্যাপরোস্কোপির মাধ্যমে কিছু ঢোকানোর মতো জায়গা ছিল না। এই কেসের সার্জেন চিকিৎসক অভিষেক তিওয়ারি জানিয়েছেন যে পেটে ব্যথা, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা ও ওজন বৃদ্ধি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন রোগী। রোগীকে পরামর্শ দেওয়া হয় যে শীঘ্রই অস্ত্রোপচার করা হোক, নইলে টিউমারটি প্রসারিত হতে হতে শরীরের অন্য অঙ্গেও প্রভাব ফেলবে এবং ক্ষতি করবে। ভাগ্যক্রমে অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে এবং রোগীও এখন অনেকটাই সুস্থ আছে। অস্ত্রোপচারের পর ওই মহিলার ওজন এখন ৫৬ কেজি।
ওই হাসপাতালের চিকিৎসক প্রসাদ বলেন, ‘সার্জেন হিসাবে আমার চিকিৎসা জীবনের ৩০ বছরে আমি এ ধরনের কেস দেখিনি, যেখানে টিউমারের ওজন রোগীর দেহের ওজনের প্রায় অর্ধেক। এর আগে এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছিল ২০১৭ সালে কোয়াম্বাটুরে, সেখানে এক মহিলার ডিম্বাশয় থেকে ৩৪ কেজির টিউমার অস্ত্রোপচার করা হয়।’