সময়টা ১৯৯৬ সাল। এ বছরের ১২ অক্টোবর শেখ আব্দুল মজিদ ও আঙ্গুরা বেগম দম্পতির কোলজুড়ে জন্মগ্রহণ গ্রহণ করেন এক কন্যা শিশু। নাম তার শিরিন আক্তার। এই শিরিন আক্তারই বর্তমানে দেশের ফ্যালকন গার্ল। দেশ সেরা দ্রুততম মানবী। যার ঝুলিতে জমা রয়েছে দেশ বিদেশের নানা অর্জন। এখন তিনি সমান তালে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ট্র্যাক এন্ড ফিল্ড। একের পর এক অর্জন করে চলেছেন নানা রেকর্ড।
সুন্দরবনের কোলঘেঁষা বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণে সাতক্ষীরায় বেড়ে ওঠা শিরিনের। সাগর আর সুন্দরবনের বাঘিনীর মতোই দুরন্ত তার ছুটেচলা। শিরিনের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় দহাকুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিকেএসপি থেকে মাধ্যমিক ও কলেজ জীবন শেষ করেন এবং পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন।
শৈশব থেকেই খেলাধুলা বিশেষ করে খাটো পাল্লার দৌড় এসবই ছিল তার নেশা। বাঘিনীর মত ছিল তার চলাফেরা। দুরন্ত কিশোরী চাইতেন দুরন্ত গতিতে প্রজাপতি মত উড়তে। তার এই দুরন্তপনার কারণে শুনতে হয়েছে মায়ের বকুনি। অনেক সময় মায়ের হাতে মার খেতে হয়েছে তাকে।
সাতক্ষীরায় মা–বাবা, বোন ও ভাগ্নি আছে। খেলা আর পড়াশোনার কারণে সারা বছরই পরিবার থেকে দূরে থাকতে হয় শিরিনকে।
দেশের দ্রুততম মানব-মানবীর খেতাব ধরে রাখলেন শিরিন আক্তার। শুধু দেশেই কেন বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা প্রাণ করে বাংলার এই উড়ন্ত বাঘিনী সাফ গেমস, কমনওয়েলথ গেমস এবং রিও অলিম্পিকেও বাংলাদেশকে বহন করেছে।
১৫ তম জাতীয় সামার অ্যাথলেটিক্সে ১২ দশমিক ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে দেশের দ্রুততম মানবী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন শিরিন আক্তার। ৪২ তম জাতীয় অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে বাংলাদেশের দ্রুততম মানবীর মুকুট জয় করেছিলেন অ্যাথলেট শিরিন আক্তার।
করোনা সময়ে বিকেএসপিতে থেকেই শিরিন নিজের ফিটনেস ধরে রেখেছে। টোকিও অলিম্পিক করোনা কারণে ২০২১ পিছিয়ে পড়ার পরেও তার উৎসাহ আর উদ্দীপনায় কোন কমতি নেই।
এ সময়ে দেড় শ কেজি ওজন নিয়ে হাফ স্কোয়াট করছেন দেশের দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তার।
নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে দেশকে ও দেশের লাল সবুজ পতাকাকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরাই শিরিনের একমাত্র লক্ষ্য।