অভিনেতা প্রবীর মিত্রকে ঢাকাই সিনেমার রঙিন নবাব বলে ডাকেন অনেকেই। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য কালজয়ী ছবিতে অভিনয় করেছেন৷ পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ নানা স্বীকৃতি। সাথে আছে কোটি দর্শকের ভালোবাসা। চলচ্চিত্রের জীবন্ত এই কিংবদন্তি অভিনেতার ৮০তম জন্মদিন আজ।
তবে এবারের জন্মদিনে আনন্দ করার মতো অবস্থায় নেই তিনি। বার্ধক্যজনিত সমস্যার সাথে সম্প্রতি তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। করোনামুক্ত হলেও শরীর দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে পা পিছলে পড়ে মাথায় আঘাত। সবমিলিয়ে তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ৷
পড়ে যাওয়ার পর থেকে কানে কম শুনছেন। এখন ঘরের বাইরে আসতেও চান না তিনি। এফডিসিতে আসেন না দীর্ঘদিন। এমনকি বই পড়া এবং টেলিভিশন দেখার মতো অভ্যাসও ছেড়ে দিয়েছেন। যে ক’দিন বাঁচেন সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য দেশের মানুষের কাছে তিনি দোয়া চেয়েছেন ।
১৯৪০ সালের ১৮ আগস্ট চাঁদপুর শহরে এক কায়স্থ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তবে বংশপরম্পরায় পুরনো ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা তিনি। ঢাকা শহরেই বেড়ে উঠেছেন৷ প্রথম জীবনে সেন্ট গ্রেগরি থেকে পোগজ স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
স্কুলে পড়া অবস্থায় জীবনে প্রথমবারের মতো নাটকে অভিনয় করেন প্রবীর মিত্র। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে তার চরিত্রটি ছিল প্রহরীর। ‘লালকুটি’ থিয়েটার গ্রুপে পেশাদার অভিনয় জীবন শুরু করেন। এরপর বিভিন্ন মাধ্যমের অভিনয়ে দেখা গেছে তাকে। সবখানেই হয়েছেন সফল।
তবে মঞ্চ, টিভিকে ছাপিয়ে দর্শকের কাছে চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে সমাদৃত তিনি। নির্মাতা এইচ আকবরের ‘জলছবি’ দিয়ে তিনি প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। প্রথমদিকে নায়কের চরিত্রে অভিনয় করতেন। তিতাস একটি নদীর নাম, চাবুকসহ বেশ কিছু ছবিতে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে প্রশংসা পান।
বেলাল আহমেদ পরিচালিত ‘নয়নের আলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন প্রবীর মিত্র। প্রবীর মিত্রের ভাষায় তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছবি ‘নয়নের আলো’। মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিল’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন।
সর্বশেষ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা ছবিতে। পরবর্তী সময় চরিত্রাভিনেতা প্রবীর মিত্রকেই বেশি দেখা গেছে সিনেমায়।