বন্যায় এখন পর্যন্ত সারাদেশে ৮ জনের মৃত্যু হুয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। এর মধ্যে জামালপুরে চারজন এবং লালমনিরহাট, সুনামগগঞ্জ, সিলেট ও টাঙ্গাইলে একজন। বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) সচিবালয়ে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বন্যায় দেশের ১৮ জেলা প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত জেলাগুলোর উপজেলা ৯২টি ও ৫৩৫টি ইউনিয়নে বন্যায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ২২ লাখ ৪৬ হাজার ৪৭২ জন। পানিবন্দি ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩৭৬টি পরিবার। এবারের বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলে আমরা আশা করছি। কারণ নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। যেসব নদীর পানি বাড়ছে সেগুলোর পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমতে শুরু করবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি স্থিতিশীল রয়েছে। অপরদিকে যমুনা নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমতে শুরু করবে এবং যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল হবে। গঙ্গা-পদ্মার নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এ পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। কুশিয়ারা ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনার প্রধান নদীগুলোর পানি কমছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট, সুনামগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে। অপরদিকে গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, নাটোর ও নওগাঁ জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। ‘আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, রাজবাড়ী ও ঢাকার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বন্যায় আক্রান্ত ১২ জেলায় এক হাজার ৫৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ৩০ হাজার ৭০৫ জন মানুষ এবং ৫৬ হাজার ৩১টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আনসার, গ্রাম পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক ও এনজিও প্রতিনিধিরা কাজ করছেন। বন্যার কারণে সরকার ৫৯৬টি মেডিকেল টিম গঠন করেছে। এরমধ্যে বর্তমানে ১৯৭টি টিম কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, আক্রান্ত এলাকায় চার হাজার ৮৫০ টন চাল বিতরণ এবং এক কোটি ৯১ লাখ টাকা নগদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৮২২ প্যাকেট। শিশুখাদ্য কেনা বাবদ ২১ লাখ ও পশু খাদ্যের জন্য ২১ লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে।