করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিজ দেশে ফিরতে হবে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তে ঝুঁকির মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কয়েক লাখ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ। একইসঙ্গে ঝুঁকিতে পড়েছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের চাকির পাওয়ার বিষয়টিও। যদিও এ সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী উল্লেখ করে মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সেদেশের বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
আন্তর্জাতিক শিক্ষা সংস্থার তথ্য বলছে, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা করতে গেছেন ১১ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থী, যা ওই বছর দেশটির মোট শিক্ষার্থীর সাড়ে ৫ শতাংশ। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মার্কিন অর্থনীতিতে যুক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৪শ’ কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের তুলনায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের খরচও অনেক বেশি।
পড়াশুনার পাশাপাশি স্থানীয় অনেক প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন ও পূর্ণকালীন চাকরি করে দেশটির অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা। কিন্তু অনলাইন ক্লাস চালুর পর ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে বিদেশি এসব শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল হয়ে যাবে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে এসব অর্থ সংস্থানের বিষয়গুলো।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত এক শিক্ষার্থী জানান, এখানে ৭ বছর ধরে আছি। আমরা নাগরিকদের চেয়ে বেশি অর্থ এই দেশে খরচ করি। আমি যদি চলেও যাই, সব খুলে দিলেও আর আসতে পারবো না। আমার গ্রিন কার্ড নেই। আর মহামারির মধ্যে সশরীরে ক্লাস করা কোনো ভালো সিদ্ধান্ত নয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক শিক্ষা অ্যাডভোকেসি গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-২৯ শিক্ষাবর্ষে ৪ লাখ ৬০ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী দেশটির শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, খুচরা ব্যবসা, স্বাস্থ্যখাতে কর্মরত ছিলেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থীর খরচ এসেছে বিদেশে অবস্থিত পরিবার থেকে কিংবা নিজের চাকরি থেকে, বাকি ৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর খরচ এসেছে সরকারি, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় বা ভিনদেশি স্পন্সর থেকে।
দেশটিতে লেখাপড়া করতে যাওয়া আরেক শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্তকে অনৈতিক উল্লেখ করে বলেন, আমরা পুরোদমে সব শুরু করতে চাই। কিন্তু তাতে করোনা আরো ছড়িয়ে পড়বে। এখন যে অবস্থা বিরাজ করছে তাতে সব শিক্ষার্থী নিজ দেশে ফিরতেও পারবে না। তাদের ভুগতে হবে এমন এক ইস্যুতে, যেখানে তাদের কোনো দোষ নেই।