দুপুর ১:২৬ বুধবার ২৪শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ১৮ই জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি

হোম প্রবাস আড়াই লাখ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাতে পারে কুয়েত

আড়াই লাখ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাতে পারে কুয়েত

লিখেছেন মামুন শেখ
আড়াই লাখ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাতে পারে কুয়েত-durantobd.com
Spread the love

কুয়েত সরকার সম্প্রতি তাদের দেশ থেকে অভিবাসীর সংখ্যা কমিয়ে আনতে একটি প্রবাসী কোটা বিল প্রণয়ন করেছে। ওই খসড়া আইনে বাংলাদেশিদের জন্য মাত্র ৩ শতাংশ কোটা প্রস্তাব করা হয়েছে বলে বিসিবি বাংলা অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে।

আর তাই এই আইনটি পাশ হলে দেশটিতে অবস্থানরত আড়াই লাখের বেশি অভিবাসীকে ফেরত আসতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সবশেষ হিসেব অনুযাযী, কুয়েতের মোট জনসংখ্যা ৪৩ লাখ; যার মধ্যে ৩০ লাখই অভিবাসী। শতাংশের হিসেবে যা প্রায় ৭০%।

সম্প্রতি কুয়েত সরকার অভিবাসীর সংখ্যা পর্যায়ক্রমে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে। যাতে জনতাত্ত্বিক ভারসাম্য রক্ষা করা যায়।

এ লক্ষ্যেই কুয়েতের পার্লামেন্টের একটি কমিটি সম্প্রতি এ সংক্রান্ত খসড়া বিল অনুমোদন করে। এতে বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের বিভিন্ন কোটায় ভাগ করে ফেরত পাঠানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বিলটি আইনে পরিণত হলে আড়াই লাখেরও বেশি বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হবে। এ নিয়ে শঙ্কা বিরাজ করছে কুয়েতে অবস্থানরত প্রবাসীদের মধ্যে।

শাহ করিম নামে এক বাংলাদেশি প্রবাসী বিবিসিকে বলেন, কুয়েতে চাকরির বেতন, কাজের পরিবেশ খুব ভালো। আমার টাকার ওপর পুরো পরিবার চলে। এখন যদি চলে আসতে হয়। আমার পরিবার কিভাবে চলবে? আমরা তো এমন পরিবেশ পাবো না। বাংলাদেশের লাখ লাখ অভিবাসীকে কী হবে?

এক হিসেব অনুযায়ী কুয়েতে বর্তমানে প্রায় তিন লাখ বাংলাদেশি প্রবাসী রয়েছেন। এদের অধিকাংশই বিভিন্ন অদক্ষ বা স্বল্প-দক্ষ পেশায় নিয়োজিত। বিশেষ করে পরিচ্ছন্নতা কর্মী, নির্মাণ শ্রমিক, গাড়ি চালনা, হোটেল বয় ইত্যাদি পেশায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের বেশি দেখা যায়। এদের বেশিরভাগই দেশে ফিরে আসলে তাদের পরিবার আর্থিক সংকটে পড়তে পারে।

শ্রমিকদের ফেরত পাঠালে কুয়েতেরও সমস্যা:

কুয়েত সরকারের এই খসড়া আইনটি বাস্তবসম্মত নয় উল্লেখ মত দিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম।

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, এসব অভিবাসী ছাড়া কুয়েত সরকার চলতে পারবে না।

তিনি বলেন, কুয়েত চাইছে, সরকারি চাকরি, ডাক্তার, নার্স, প্রকৌশলী, ইত্যাদি দক্ষ কর্মসংস্থানের জায়গাগুলোয় তাদের দেশের নাগরিকদের বসাতে। কিন্তু পরিচ্ছন্নতার কাজ, নির্মাণের কাজ, গাড়ি চালানোর কাজ, দোকানের কর্মচারীর কাজ তো কুয়েতিরা করবে না। এসব অভিবাসী পাঠিয়ে দিলে তাদের চলবে কীভাবে?এস এম আবুল কালাম জানান, কুয়েতের সরকার অভিবাসী কমানোর সিদ্ধান্ত নিলেও দেশটিতে কী পরিমাণ অভিবাসী দরকার সে বিষয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পার্লামেন্টের কমিটি এখনও প্রস্তুত করতে পারেনি।

সেই প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করবে কত সংখ্যক অভিবাসী দেশটিতে থাকবেন। আর সব মিলিয়ে পুরো বিষয়টি আরও সংশোধনের সুযোগ রয়েছে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৬ সাল থেকে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়ে আসছে কুয়েত। আর তখন থেকেই বাংলাদেশের রেমিটেন্স আয়ের একটা বড় অংশ আসছে দেশটি থেকেই।

চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে এই কুয়েত থেকে প্রায় ৫০ কোটি মার্কিন ডলার রেমিটেন্স আয় হয়েছে।

এখন এই দেশটি এতো বিপুল সংখ্যক শ্রমিক পাঠিয়ে দিলে রেমিটেন্স আয়ের ওপর বড় ধরণের চাপ সৃষ্টি হবে।

You may also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More