এখন মোবাইল আছে মানেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অ্যাকাউন্টও আছে। কিছুটা খরুচে হলেও তাৎক্ষনিকভাবে সহজে টাকা আদান প্রদানের জন্য কমবেশি প্রত্যেকেই দ্বারস্থ হন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের। সশরীরীরে ব্যাংকে গিয়ে টাকা পাঠানোর রিস্ক নেই বললেই চলে। কিন্তু মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে কিছু রিস্ক আছে। এরমধ্যে অন্যতম হলো- ভুল নম্বরে অর্থাৎ একজনের কাছে টাকা পাঠাতে গিয়ে অন্য জনের অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাওয়া। এমন বেকায়দায় পড়ে অনেকেই বড় ক্ষতির মধ্যে পড়ে যান। অনেক ক্ষেত্রে টাকা তো ফেরত পানই না, বরং হতবুদ্ধি হয়ে এটা সেটা করতে গয়ে নাজেহাল হন।
আর তাই জেনে নেয়া যাক মোবাইলে ভুল নম্বরে টাকা চলে গেলে যা করতে হবে:
ভুল নম্বরে টাকা চলে যাবার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই তাড়াহুড়ো করে প্রাপকের নম্বরে ফোন করে টাকা ফেরত চান। কিন্তু এই ধরনের ঘটনায় টাকা ফেরত পাবার সম্ভাবনা খুবই কম। এক্ষেত্রে যাকে টাকা পাঠিয়েছেন সম্পূর্ণ তার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। তার সদিচ্ছা থাকলে আপনার টাকা হয়তো ফেরত পাঠিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমনটা হয়না বলেই শোনা যায়।
ফোন করলে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল- ফোন পেয়ে টাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ওই ব্যক্তি দ্রুত সেটি অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে ফেলতে পারেন। আর তেমনটা করে ফেললে বিকাশ কর্তৃপক্ষের কিছু করার থাকবে না।
আর তাই তাকে ফোন না দিয়ে প্রথমেই যতো দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করুন। ট্রানজেকশন নাম্বার নিয়ে জিডি করুন। আর জিডির নম্বরটি নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে চলে যান বিকাশ অফিসে। সেখানে গিয়ে আপনার সমস্যা তাদের জানান।
প্রাপক টাকা উঠে ফেলার আগেই জিডির কপি এবং মেসেজসহ যদি বিকাশ অফিসে যোগাযোগ করেন তাহলে তারা টেম্পোরারি ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট লক করে, উনার সঙ্গে কথা বলবে।
আরো পড়ুন: ইউটিউবে সবচেয়ে বেশি ভিউয়ের রেকর্ড গড়ল ব্লাকপিংক (ভিডিও)
প্রাপক যদি টাকা যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন তাহলে, বিকাশ অফিস থেকেই টাকা স্থানান্তর করে দিবে। আর যদি তিনি দাবি করেন যে, টাকাটা তার নিজের। তাহলে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তাকে অফিসে এসে অ্যাকাউন্ট ঠিক করে নিতে হবে।
কিন্তু পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যেও যদি তিনি না আসেন তাহলে টাকা যিনি পাঠিয়েছেন তার অ্যাকাউন্টে ফেরত চলে যাবে। আর তারও পরবর্তী ৬ মাসে অ্যাকাউন্ট ঠিক না করলে অ্যাকাউন্টটি ডিজেবল হয়ে যাবে চিরতরে এবং প্রেরক আদালতের সাহায্য নিয়ে টাকা আনতে পারবেন।
বিকাশ কর্তৃপক্ষের পরামর্শ
তবে বিকাশ তাদের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে যেটি বলছে তাহলো, বিকাশ একাউন্ট থেকে যেকোনো ভুল লেনদেনের দায়িত্ব গ্রাহকের/প্রেরকের (যিনি টাকা পাঠাচ্ছেন)। কারণ লেনদেন করার সময় গ্রাহক নিজেই প্রাপকের মোবাইল নাম্বার, টাকার পরিমাণ ও পিন দেয়ার মাধ্যমে টাকা পাঠান। পিন নাম্বার দেয়ার আগে গ্রাহক তার মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে নিজের দেয়া তথ্য (প্রাপকের মোবাইল নাম্বার ও টাকার পরিমাণ) দেখতে পান যাতে টাকা পাঠানোর আগে প্রেরক তথ্যগুলো যাচাই করতে পারেন এবং কোনো ভুল হয়ে থাকলে টাকা পাঠানোর নির্দেশ বাতিলও করতে পারেন। তাই গ্রাহক এর পরেও ভুল একাউন্টে টাকা পাঠালে, গ্রহণকারীর অনুমতি বা আদালতের নির্দেশনা ছাড়া পাঠানো টাকা প্রেরককে ফেরত দেয়ার এখতিয়ার বিকাশ-এর নেই।
আর তাই বিকাশ একাউন্ট থেকে যেকোনো লেনদেনের সময় প্রাপকের (যাকে টাকা পাঠাচ্ছেন) একাউন্ট নাম্বার ও টাকার পরিমাণ নিশ্চিত হয়ে লেনদেন করার পরামর্শ দিয়েছে বিকাশ।
শুধু বিকাশ নয়, ভুল নম্বরে টাকা চলে গেলে নগদ কিংবা রকেটের ক্ষেত্রেও একই কাজ করতে হবে।