করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার মধ্যেই খুলে দেয়া হল বিশ্বের প্রথম সোনায় মোড়ানো হেটেলের দরজা। সোনার থালা-বাসন, খাট-পালঙ্ক এমনকি সোনায় মোড়ানো টয়লেটের কথাও অনেকে শুনেছেন। কিন্তু পুরো একটা হোটেল সোনায় মোড়ানো! সত্যিই অবাক করার মতো বিষয়।
বিশ্বের প্রথম সোনায় মোড়া পাঁচতারা হোটেল সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক:
সোনার প্লেটে নির্মিত হোটেলটি তৈরি করা হয়েছে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে। এটির নির্মানকাজ শুরু হয় ২০০৯ সালে। খুলে দেয়া হলেও এটির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ এটির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। তাক লাগানো এ হোটেলটি ফাইভ স্টারেরও বেশি। এটি একটি সিক্স স্টার অর্থাৎ ছয়তাঁরা হোটেল।
নয়নাভিরাম হোটেলটির নাম রাখা হয়েছে ‘ডলস হ্যানয় গোল্ডেন লেক’ (Dolce Hanoi Golden Lake)।
হোটেল তৈরিতে খরচ:
হোটেলটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় ১ হাজার ৬৯৬ কোটি ৮৬ লাখ ২২ হাজারের কাছাকাছি। এর ইন্টেরিয়র এবং এক্সটেরিয়র দুই ক্ষেত্রেই ২৪ ক্যারেটের স্বর্ণ ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু পুরো হোটেলটি সোনার পাতে তৈরি তাই নয়, এর টয়লেট সিট থেকে শুরু করে লবি, রুম, ইনফিনিটি পুল, এমনকী বাথরুমের শাওয়ারের মাথাটিও সোনার তৈরি। হোটেলে কোনো অতিথি চা-কফি খেতে চাইলে তাকে সোনার কাপেই তা পরিবেশন করা হবে।
হোটেলটি বানালেন যারা
করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ভিয়েতনামের পর্যটন শিল্পের অন্যতম আকর্ষণ হতে চলেছে স্বর্ণের এই হোটেলটি। হোটেলে কাজ শেষ হতে হতে হয়তো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তবে গত কয়েক বছর ধরেই হোটেলটি দেখতে আসছেন পর্যটকরা। ভেতরে প্রবেশের সুযোগ না পেলেও বাইরে অনেকেই ভিড় করেন। হ্যানয়ের বাদিন জেলার গিয়াং ভো লেকের একেবারেই তীরে তৈরি হয়েছে ডলস হ্যানয় গোল্ডেন লেক হোটেল। আর এটি তৈরি করছে দেশটির প্রসিদ্ধ হোয়া বিন গ্রুপ। আর এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সামলাচ্ছে আমেরিকান সংস্থা উইনধাম হোটেল গ্রুপ।
‘ডলস হ্যানয় গোল্ডেন লেক’ সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য:
হোটেলের ভেতরে এবং বাইরে ৫ হাজার বর্গমিটারের সিরামিক টাইল বসানো হয়েছে। টাইলসগুলো সম্পূর্ণ স্বর্ণের তৈরি। ২৫ তলা বিশিষ্ট হোটেলের রুফটপে ইমিউনিটি পুল রয়েছে। কাপ থেকে শুরু করে খাবার-দাবার সবই সোনার পাত্রে পরিবেশন করা হবে। এছাড়া হোটেলের যাবতীয় আসবাবপত্রও স্বর্ণের।
‘ডলস হ্যানয় গোল্ডেন লেক’-এ এক রাতের খরচ কত?
এমন চিত্তাকর্ষক হোটেলে থাকার খরচ কেমন? স্বাভাবিকভাবেই ভাবছেন, স্বর্ণের মতোই দামি হবে। কিন্তু আসলে তা নয়। ‘ডলস হ্যানয় গোল্ডেন লেক’ হোটেলে রুম ভাড়া শুরু হচ্ছে ২৫০ মার্কিন ডলার থেকে। অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় ২১ হাজার টাকার কিছু বেশি। টাকার পরিমানটা বড় হলেও বিভিন্ন দেশে এমন অনেক হোটেল আছে যেখানে আপনি এক রাত থাকতে গেলে এরচেয়ে অনেক বেশি টাকা খরচ হবে।
আপনি চাইলেই এই হোটেলে অ্যাপার্টমেন্টও ভাড়া করতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে অনেক বেশি- ৬৫০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রার যা সাড়ে ৫ লাখ টাকার বেশি।
‘ডলস হ্যানয় গোল্ডেন লেক’ এর নির্মাতা সংস্থা হোয়া বিন গ্রুপের চেয়ারম্যান এনগ্যুয়েন হু ডুয়োং জানান, তাদের কোম্পানির একটি ফ্যাক্টরি রয়েছে; যেখানে খুব সস্তায় নানা ধরনের সোনার জিনিসপত্র তৈরি করা হয়। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে এই হোটেলে থাকার খরচ তুলনামূলক অনেক কম।
তাদের প্রত্যাশা, শুধু ধনীরাই নয়, তুলনামূলক মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চ মধ্যবিত্তরাও যেনো বিশ্বের প্রথম সোনার হোটেলটি (World’s First Gold Plated Hotel) থেকে ঘুরে যান।