বিষয়টি নজরে আসলে বৃহস্পতিবার সকালে অভিযুক্ত পিতা মাহমুদুল হক বাচ্চুকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মো. নুরুজ্জামান। তাকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে দাগনভূঞা থানায় হস্তান্তর করা হবে বলেও র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
গতকাল বুধবার (০১ জুলাই) বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র নিন্দার ঝড় বয়। দাগনভূঞা উপজেলার পূর্ব চন্দ্রপুর মডেল ইউনিয়নের উত্তর গজারিয়া গ্রামে এ পাশবিক ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের ওবায়দুল হকের ছেলে মাহমুদুল হক বাচ্চু ( ৫০) বিয়ের কয়েক বছর পরও নিজের কোন সন্তান না হওয়ায় স্ত্রী খোতেজা বেগমের অনুরোধে গত ৯ বছর পূর্বে ৫ বছর বয়সে মেয়েটিকে দত্তক নেন। এরপর মায়া মমতা দিয়ে নিজের সন্তানের মত শিশুটিকে পালন পালন করতে থাকে তারা।
ধীরে ধীরে শিশু থেকে কৈশর ও এক পর্যায়ে যৌবনে পা রাখে মেয়েটি। তার পরই মেয়েটির জীবনে নেমে আসে অমানিশার অন্ধকার। এতদিন যাকে সে পিতা হিসাবে জানতো সে লোকটিই দিনের পর দিন তার উপর জোর পূর্বক ঝাঁপিয়ে পড়ে রাতে আঁধারে। লাজ লজ্জার ভয়ে অসহায় মেয়েটি পাষণ্ড পালক পিতার অমানবিক নির্যাতনের কথা কাউকে কিছু বলতে না পেরে এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
জুন মাসের প্রথম দিকে মেয়েটির শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ করেন মেয়েটির পালক মা ও খালা। এর পর তারা গত ২৩ জুন মেয়েটিকে গোপনে দাগনভূঞা উপজেলার ইউনিক হাসপাতালে নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা করালে কিশোরী মেয়েটি ৪ মাস অন্তঃসত্ত্বা বলে জানতে পারেন তারা।
হাসপাতাল থেকে ফিরে এসে এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা করে বাপের বাড়ি চলে যায় বাচ্চুর স্ত্রী খোতেজা। এরপরও প্রকাশ্য এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে ঘটনার মূলহোতা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করেন এলাকাবাসী।
খবর পেয়ে বুধবার (০১ জুলাই) সন্ধ্যার সময় ঘটনাস্থলে গিয়ে হাজির হন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রায়হান। সেখানে গিয়ে তিনি বাচ্চুর স্ত্রী ও মেয়েটিকে সামনে হাজির করে বিষয়টির সত্যতা জানতে পারেন।
দাগনভূঞা ইউনিক হাসপাতালের পরিচালক নাছির উদ্দিন আজাদ মেয়েটির আল্ট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষার রিপোর্টের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আল্ট্রাসনোগ্রাফি’র সময় মেয়েটির বয়স ১৪ বছর হলেও ১৮ বছর লিখিয়েছে তার সাথে আসা স্বজনরা। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রায়হান জানান, ঘটনাটি সত্য। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান তিনি।