চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার দেহাটির একটি ফিলিং স্টেশনের কাছ থেকে ট্রাক ভর্তি সরকারি চাল উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ।
গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ চাল উদ্ধার করে ডিবি পুলিশের একটি টিম। তবে এখনো জানা যায়নি উদ্ধারকৃত চালের রহস্য আসলে কী! এ নিয়ে রাত থেকেই পুলিশ জোর তদন্ত শুরু করেছে। উদ্ধারকৃত এই চালের বিষয়ে আজ বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ।
জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জাহিদের নির্দেশে আন্দুলবাড়ীয়া এলাকায় অভিযান চালায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অভিযান দলে ছিলেন এসআই ইবনে খালিদ স্ট্যালিন, এসআই সুলতান, এসআই মুহিত, এসআই রজিবুল হক ও এএসআই বিজন।
এ সময় আন্দুলবাড়ীয়া দেহাটি পিয়াস ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে একটি ট্রাক (চুয়াডাঙ্গা-ট-১১০৭১৮) আটক করে ডিবি পুলিশের এ দলটি। টের পেয়ে ট্রাকের চালক ও হেলপার আগেই পালিয়ে যায়। পরে ট্রাকে তল্লাশি চালিয়ে দেখা যায় ট্রাক ভর্তি সরকারি চাল। তবে ট্রাকে কত বস্তা চাল আছে, তা তাৎক্ষণিক গণনা করা সম্ভব না হওয়ায় বলা যাচ্ছে না। তবে পরিমাপ করে দেখা যায় ট্রাকসহ চালের ওজন ২৯ টন। এরমধ্যে ট্রাকের ওজন বাদ দিলে আনুমানিক ২২ টন চাল হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধার হওয়া প্রতিটি চালের বস্তায় লেখা আছে ‘খাদ্য অধিদপ্তরের জন্য, উৎপাদন মাস: নভেম্বর/১৯, নেট ওজন ৫০ কেজি, দি ক্রিসেন্ট জুট মিলস কোং লিঃ’।
এদিকে, উদ্ধার হওয়া সরকারি এ চালের মালিক কে হতে পারে, তা নিয়ে নানা সন্দেহ দানা বেধেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই বলেছেন, ‘আটক ট্রাকটি যেহেতু পিয়াস ফিলিং স্টেশনের মালিকের এবং যেখান থেকে সরকারি চালভর্তি ট্রাকটি আটক হয়েছে, তার পাশেই একই মালিকের একটি অটো রাইস মিলও আছে, তাই এ চাল কারবারে পিয়াস ফিলিং স্টেশন মালিকের সম্পৃক্ততা আছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার।’
এদিকে, ‘পিয়াস ফিলিং স্টেশনের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। এমনকি পিয়াস ফিলিং স্টেশন পরিচালনায় যারা দায়িত্বে থাকেন, চালভর্তি ট্রাক আটক হওয়ার পরে ক্যাশিয়ারসহ তাঁরাও তাৎক্ষণিকভাবে পালিয়ে যাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।’
ট্রাকভর্তি চাল উদ্ধারের ঘটনা সম্পর্কে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, ‘আন্দুলবাড়ীয়ার দেহাটি পিয়াস ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে ট্রাকভর্তি চাল উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। এ চাল নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তপূর্বক বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।’
এ বিষয়ে অভিযানিক দলের সদস্যদের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা জানান, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও ডিবি পুলিশের ওসি মামুন অর রশিদের নেতৃত্বে আমরা জীবননগর থানার আন্দুলবাড়ীয়া এলাকার দেহাটিতে অভিযান পরিচালনা করি। এ সময় দেহাটিতে অবস্থিত পিয়াস ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে সরকারি চালভর্তি একটি ট্রাক আটক করা হয়। তবে অভিযানের খবর পেয়ে ট্রাকের চালক ও হেলপার ট্রাক ফেলে আগেই উধাও হয়ে গেছে।’ তবে এ সরকারি চাল কোথাকার ও কীভাবে, কী উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তা তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি।