আজ ১ জুলাই ২০২০। আজ থেকে ঠিক ৯৯ বছর আগে ১৯২১ সালের এ দিনে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনামলে বাংলার শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বার। অর্থাৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আজ শততম জন্মদিন।
কালের বিবর্তনে আজ দেশ সেরা ও সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নিয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দানকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
নানান রাজনীতি ও বাধা পেরিয়ে তৎকালীন সময়ে ঢাকার সবচেয়ে অভিজাত ও সৌন্দর্যমণ্ডিত রমনা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমির উপর পূর্ববঙ্গ এবং আসাম প্রদেশ সরকারের পরিত্যক্ত ভবনসমূহ ও ঢাকা কলেজের (বর্তমানে সেটি কার্জন হল) ভবনসমূহের সমন্বয়ে যাত্রা শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যাত্রার পরিসরটা ছিলে বর্তমানের তুলনায় খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে। তিনটি অনুষদ ও ১২টি বিভাগ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ এ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা।
এ শতাব্দী আগে হাটি হাটি পা পা করে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু করেছিলো গত ১শ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। বর্তমানে এখানে ১৩টি অনুষদ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, ৮৪টি বিভাগ, ৬০টি ব্যুরো ও গবেষণা কেন্দ্র এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ১৯টি আবাসিক হল, ৪টি হোস্টেল ও ১৩৮টি উপাদানকল্প কলেজ ও ইনস্টিটিউট রয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় অর্ধ-লক্ষ। এছাড়া পাঠদান ও গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষক।
এবারের ১০০তম বর্ষে পদার্পণের ক্ষণটি জাঁকজমকে উদযাপনের পরিকল্পনা থাকলেও সেটি করোনা সংক্রমণের কারণে সীমিত পরিসরে করা হচ্ছে।
দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শুভেচ্ছা বাণীতে বলেছেন, ‘২০২০-এ নিরানব্বই বছর শেষ করে শতবর্ষে পা দিল আমাদের এ চিরতরুণ প্রতিষ্ঠান। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে লোকসমাবেশ এড়িয়ে প্রাণপ্রিয় ছাত্র-ছাত্রীবিহীন স্বল্পপরিসরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আয়োজনে নিঃসন্দেহে আনন্দ, প্রশান্তি ও স্বস্তির ঘাটতি অনস্বীকার্য। তবে মুজিববর্ষের এ অলোকসামান্য কালপর্বে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এবারের বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের তাৎপর্য অত্যন্ত গভীর ও ব্যাপক। প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধু এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ নামক আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমির দুই অন্তহীন প্রেরণা-উৎস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে পালিত হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০২০ লাভ করেছে এক অনন্য মাত্রা। প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উদযাপনের বিরল সৌভাগ্য-প্রাপ্তির পূর্বক্ষণে মুজিববর্ষ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চির অম্লান আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।’
দেশের সকল আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব-প্রদানকারী এবং প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাতি অর্জনকারী এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে অর্জন করেতে পারেনি কাঙ্ক্ষিত মান। আর তাই বিশ্বের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে করা র্যাঙ্কিং-এ সেরাদের তালিকায় দেখা মেলে শতবর্ষী প্রতিষ্ঠানটির।
শতবর্ষে পা রাখলো প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাবি
পুর্ববর্তী নিউজ